কীভাবে নিজের মধ্যে দৃঢ় মনোবল ও প্রবল আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায়? কিভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব আরো উন্নত করা যায়?

137
কীভাবে নিজের মধ্যে দৃঢ় মনোবল ও প্রবল আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় কিভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব আরো উন্নত করা যায়

 

আপনাকে উদাহরণ স্বরূপ একটি ছোট্ট পিঁপড়ের কথা বলি। বলতে গেলে পিঁপড়ে খুব ছোট্ট যার ওজন প্রায় 1 থেকে 5 মিলিগ্রাম। কিন্তু এই ছোট ছোট পিঁপড়েগুলি তাদের নিজের ওজনের চেয়ে 50 গুণ বেশি অর্থাৎ 50 থেকে 250 মিলিগ্রাম পর্যন্ত জিনিস বহন করে থাকে। আমরা বেশিভাগ মানুষ, যার ওজন 60-70 কেজি আর যদি কোনো ব্যক্তিকে 100 কেজির কোনো জিনিস তুলতে বলা হয়, তবে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। তখন এটাই ভাবায় পিঁপড়ে এই কাজটি কি ভাবে কীভাবে করছে?

তাই কখনই আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না। সাফল্য না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিবার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। জীবনে সফল হওয়ার জন্য দৃঢ় মনোবল আর প্রবল আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কিছু লোকের মধ্যে শৈশবকাল থেকেই এটার ঘাটতি থাকে, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে এটি জীবনের অভিজ্ঞতার কম থাকার কারণে পড়তে শুরু করে। তবে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখলে দৃঢ় মনোবল আর প্রবল আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এর কিছু কিছু আমিও অনুসরণ করি।

Advertising

1) আত্মবিশ্বাস তৈরির জন্য শক্ত এবং দুর্বলতাগুলি বাস্তবিক ভাবে বোঝার চেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ।

2) চিন্তা-ভাবনা ইতিবাচক হওয়া জরুরী। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন যে আচরণ বদলে আবেগকে পরিবর্তন করা যায়। তাই খুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে যাতে তার নেতিবাচক সংবেদনগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার মতন শক্তি থাকে।

3) যে বিষয়গুলির জন্য কাউকে নার্ভাস করে তোলে সেগুলি সম্পর্কে গভীর ভাবে ভাবতে হবে। যেমন, আমার ক্ষেত্রে টাইপিং এর পরীক্ষার বসলেই হাত পুরো কাঁপা শুরু হয়ে যেত। তারপর যা হবার সেটাতো বুঝতেই পারছেন। তাই এই সমস্যার মূলে যেতে হবে এবং টেকনিক গুলো বুঝতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে কিভাবে তা সমাধান করা সম্ভব।

4) ভুল থেকে ভয় পেলে চলবে না বরং ভুল থেকেই শিখতে হবে। নিজের ভুল নিজেই খুঁজে বেরকরে ভুল ত্রুটিগুলির সেই ঘাটতি দূর করে সাফল্য অর্জন করা যেতে পারে, যা সবার ক্ষেত্রেই মনোবল ও আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে। যেমন, স্কুলের ছাত্রদের ক্ষেত্রে ক্লাসের কোন বিষয়ের উত্তর ভুল হলে ভুলটা খুঁজে বের করে বার বার সঠিকভাবে অনুশীলন করতে হবে।

5) পোশাক ও স্মার্টনেস আমাদের আস্থাকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। এটি ভালভাবে প্রস্তুত করা হলে, আমাদের মধ্যে একটি আলাদা শক্তি আসে এবং এটি ইন্টিগ্রেটারের উপর খুব ভাল প্রভাব ফেলে। আমরা যদি পোশাক সম্পর্কে ছোট ছোট যত্ন নিই তাহলে তা খুব সুন্দর আত্মবিশ্বাস ও মনোবলের একটা স্তর তৈরি করতে পারে।

6) কৃতিত্ব অর্জন আত্মবিশ্বাস তৈরিতে খুব সহায়ক। সুতরাং সব পুরানো কৃতিত্বগুলি মনে রাখতে, একটি ডায়েরিতে বা অন্য ভাবে কৃতিত্বগুলি রাখতে হবে যাতে এটি যে কোনও সময় দেখতে পাওয়া যায়। যেমন কোন মেডেল, শংসাপত্র, পুরস্কার এই জাতীয় উপকরণ, ফটো, একটি ঘরে সাজিয়ে রাখতে হবে যাতে সবসময় নজরে পড়ে।

7) বডি ল্যাংগুয়েজ আত্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। আমরা যখনই বসবো বা হাঁটবো তখন ঘাড় এবং কাঁধটি বাঁকানোর পরিবর্তে সোজা রাখতে হবে। এ ছাড়া কারও চোখ চুরি করে নয়, বরং চোখ দিয়ে কথা বলতে হবে।

8) প্রতিদিন সময় মতন নিয়ম করে যোগা, ব্যায়াম করা উচিৎ এবং রাত জেগে টিভি, মোবাইলের মধ্যে না থাকাই ভালো। পর্যাপ্ত ঘুম হলে যে কেউ তার নিজের আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় মনোবল ফিরে পেতে পারেন।

9) জীবন লক্ষ্য শূন্য থাকলে আত্মবিশ্বাসও ফাঁপা হয়ে যায়। অতএব, সবাইকে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। সময়কে আরও ব্যবহার করতে হবে। কিছু করার আগে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে সেই কাজটা করতে হবে। তারপরে অবশ্যই মনোবল, প্রবল আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা সম্ভব এটা অন্তত আমার বিশ্বাস।

10) মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস দুটি ভিন্ন মানসিক অবস্থার নাম। মনোবল প্রধানত জেনেটিকালি পায় একজন মানু, অপরদিকে আত্মবিশ্বাস মূলত অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত হয়।নিজের ভেতরে এ দুটি গুনের সমন্বয় থাকা মানেই চমৎকার ব্যাক্তিত্বের অধিকারী হওয়া। মনোবল জেনেটিক্যালি প্রাপ্ত হয় কমবেশি সবাই। কিন্তু একে এক্টিভেট করতে হলে শরীর কে সুস্থ রাখুন। নিয়মিত অল্প সময়ের জন্য হলেও ধ্যান করুন।যেকোনো বিষয় গভীরে যেতে চেষ্টা করুন,এবং নিজের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন সবসম। ভয় পেলে কেন ভয় পেলেন তা ভাবুন এবং এর পরে ঠান্ডামাথায় সেই ভয়ের মুখোমুখি হোন,দেখবেন মাত্র একবার ভয়কে স্বইচ্ছায় নিজের কাছে এনে উল্টেপাল্টে দেখুন,বাকি জীবনে মনোবলের অভাব হবেনা। আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হলে অভিজ্ঞতা নিন সবকিছু থেকে। তার পরে সেটার সাথে মনোবলকে ব্লেন্ড করুন নিয়মিত।

ধন্যবাদান্তে: দেবব্রত মুখার্জী

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here