সহীহ হাদিসের আলোকে প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে কিছু বিশেষ আমল। দোয়া-আমল এবং ইবাদাত

32
আমল ও ইবাদাত, দোয়া ও আমল, প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে কিছু বিশেষ আমল, সহীহ হাদিসের আলোকে প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে কিছু বিশেষ আমল,দোয়া-আমল এবং ইবাদাত

সহীহ হাদিসের আলোকে প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে কিছু বিশেষ আমল

১. প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে সালাম ফিরিয়ে ১ বার আল্লাহু আকবার । ( নবীজি করতেন )
২. এরপর ৩ বার আস্তাগফিরুল্লাহ । ( নবীজি করতেন)
৩. এরপর আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম” –এই দোয়াটি পড়বেন ( নবীজি করতেন)
৪. এরপর আয়াতুল কুরসী ১ বার পাঠ করবেন ।
( যে ব্যাক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষ করে ১ বার আয়াতুল কুরসী পাঠ করে, সে মরলেই জান্নাতি )
৫. এরপর আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনার নার ৭ বার ( শুধু মাত্র ফজরের ও মাগরিবের নামাজের পর )
[ ওই ব্যক্তি সে দিন বা সে রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। ]
৬. এরপর রাদিতু বিল্লাহি রাব্বাও, ওয়াবিল ইসলামী দিনাও, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা ওয়া রাসূলা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।৩ বার প্রতি ওয়াক্তে
( আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি এই দোয়টি পড়বে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (যদি জান্নাতে প্রবেশের প্রতিবন্ধক কোনো আমল সে না করে। -আবু দাউদ : ১৫২৯
হাদিসে আরও বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিন বার পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা কেয়ামত দিবসে তাকে সন্তুষ্ট করবেন। তিরমিজি শরিফে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়াটি তিন বার পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা কেয়ামত দিবসে তাকে সন্তুষ্ট করবেন। )
৭. এরপর আউজুবিল্লাহিস সামিয়িল আলিম, মিনাশ শাইতানীর রজিম ৩ বার পরে সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ
“হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু ওয়া আলিমুল গাইবী। ওয়াশ শাহাদাতী হুয়ার রাহমানুর রাহীম।
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
হু আল্লা হুল্লাজী লা(আ) ইলাহা ইল্লা হু। ওয়া আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল ম্যু মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুব হানাল্লাহী আম্মা ইউশরিকুন।
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاء الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
হু আল্লাহুল খালেকুল বারিয়্যুল মুছাউয়ুরু লাহুল আছমা(আ)উল হুছনা। ইউ ছাব্বিহু লাহু মা ফিছ ছামা ওয়াতি ওয়াল আরদ্ ওয়া হুয়াল আজীজুল হাকীম।“
( ফজর ও মাগরিবের পর )
( যে ব্যক্তি এই আমল করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য সত্তর হাজার রহমতের ফেরেশতা নিযুক্ত করে দিবেন। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত রহমতের জন্য দোয়া করবে। সেদিন সে মারা গেলে শহিদের মৃত্যু হাসিল হবে । যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এভাবে পাঠ করবে, সে-ও সকাল পর্যন্ত এই মর্তবা লাভ করবে”।
৮. এরপর আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়াতুবু ইলাইহি ৩ বার ( যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আশা কবিরা গুনাহ, এই ইস্তেগফার করলে এই মাপের গুনাহ ও মাফ হয় )
৯. সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম ১০ বার
১০. সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার।
লা হাউলা ওলা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ১০ বার
১১. সুবহানআল্লাহ (৩৩বার)
আলহামদুলিল্লাহ (৩৩ বার)
আল্লাহু-আকবার (৩৩ বার)
এরপরই পড়বেন
লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা-লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর” (১ বার)
(এগুলো পাঠে গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেয়া হয়। )
১২. সূরা ফাতিহা ১ বার,
১ বার নাস
১বার ফালাক
১ বার ইখলাস
( ফজর ও মাগরিবের পরে ১ বার ফাতিহা পরে বাকি গুলো ৩বার ও ১বার কাফিরুন )
(রাসূল (সা.) বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না। )
১৩. দুরুদ শরীফ ১০ বার প্রতি ওয়াক্তে
( কেয়ামতের দিন রাসূলের শাফা’আত লাভ করবে। )
১৪. সূরা ইখলাস ১২ বার । ৪ খতমের সওয়াব
১৫. আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতা ও আউজুবিকা মিনান নার ৩ বার
( ফেরেস্তারা তার জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে থাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো জন্য )
১৬. আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া ৩ বার ( আল্লাহর কাছে সুরক্ষা চেয়ে দোয়া )
১৭. আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান নার ৩ বার ( ফজর ও মাগরিবে ৭ বার ) (জাহান্নাম থেকে মুক্তির দুআ )
১৮. আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবর, ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিন নার ৩ বার ( কবর ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার দুআ )
১৯. সুবহানাল্লাহ -১০০ ( ১০০ জন ক্রীতদাস মুক্তির সওয়াব )
আলহামদুলিল্লাহ -১০০ ( ১০০ জন মুজাহিদ ঘোড়া সহ যুদ্ধে পাঠানোর সওয়াব)
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ -১০০ ( আসমান ও জমিন পূর্ণ হয়ে যাবে সওয়াব এ )
আল্লাহু আকবার- ১০০ ( ১০০ টি মকবুল উট কুরবানীর সওয়াব )
২০. আস্তাগফিরুল্লাহ ১০০ বার
২১. সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি ১০০ বার
( এটার ফলে কেয়ামতের দিন আপনার থেকে বেশি আমল নিয়ে কেউ উঠতে পারবে না।
যে বেশি পড়বে তার কথা আলাদা )
২২. প্রত্যেক ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পাঠ করা
আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’।
( এটা হচ্ছে ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দোয়া,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে অর্থ বুঝে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’। )
২৩. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারিকা লাহু, আহাদান সামাদান লাম ইয়ালিদ ওলাম ইউ লাদ, ওলাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর 5 বার ( ১ বার পাঠ করলে ২০ লক্ষ নেকি, )
২৪. লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জলিমিন , প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩ বার
২৫. লা হাউলা ওলা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ ৩বার প্রত্যেক ওয়াক্তে ।
২৬.”ইয়া হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ূমু বিরাহমাতিকা আসতাগীস, আসলিহ লী শানি কুল্লাহু, ওয়ালা তাকিলনী ইলা নাফসী তরাফাতা ‘আইন” ১ বার, ফযর ও মাগরিবের পর। এটি রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর প্রিয় মেয়ে ফাতিমা (রা.) কে পড়তে ওসীয়ত করেছিলেন।
২৭. সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালকিহি ওয়া রিদা নাফসিহি ওয়া জিনাতা আরশিহি ওয়া মিদাদা কালিমাতিহি। -সহিহ মুসলিম শরিফ : ৭০৮৮
অর্থ : আমি আল্লাহতায়ালার প্রশংসাসমেত পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তার সৃষ্টিকুলের সংখ্যার পরিমাণ, তিনি সন্তুষ্ট হওয়া পরিমাণ, তার আরশের ওজন সমপরিমাণ, তার কথা লিপিবদ্ধ করার কালি পরিমাণ।
( উম্মত জননী হজরত জুওয়াইরিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর নবী (সা.) ফজরের সময় আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। তখন আমি জায়নামাজে ছিলাম। তিনি চাশতের সময় আমার ঘরে ফিরে এলেন। তখনও আমি জায়নামাজে ছিলাম।
উম্মত জননী হজরত জুওয়াইরিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর নবী (সা.) ফজরের সময় আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। তখন আমি জায়নামাজে ছিলাম। তিনি চাশতের সময় আমার ঘরে ফিরে এলেন। তখনও আমি জায়নামাজে ছিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘জুয়ারিয়া! আমি যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এভাবেই ওজিফা আদায়ে মশগুল ছিলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি আমাকে বললেন, আমি তোমার পরে চারটি বাক্য তিনবার বলেছি। যদি এগুলোকে ওজন করা হয় তবে তোমার কৃত সমস্ত ওজিফার চেয়ে এগুলোই বেশি ভারি হবে )
২৮. আল্লাহুম্মার ঝুঁকনি শাহাদাতান ফি সাবিলিক ।৩বার( শহীদি মৃত্যুর জন্য )
২৯. আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান ওয়ারিঝকন তায়্যিবান ওয়াআমালান মুতাকাব্বালান।
ফজরের পর ৩ বার
৩০. আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবাই ইয়াসিরা । সকালে ৩ বার সন্ধ্যায় ৩বার
( হাশরের ময়দানে হিসাব সহজ করার জন্য )
৩১. আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন ইয়ুশরীকা বিকা ওয়ানা আলাম ওস্তাগফিরুকা লিমা লা আলাম
( শিরক থেকে বাঁচার দুআ ) ফজরের পর ১ বার।
৩২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন মুআয তুমি প্রত্যেক ছালাতের শেষে এই দোয়াটি কখনো ছেড়ো না।
আল্লা-হুম্মা আ’ইন্নি আ’লা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিক।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন (মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, মিশকাত)
সোর্সঃ ইন্টারনেট

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here