বিপদে ভেঙ্গে পড়ার আগে এই লেখাটি পড়ুন। যাদের বিপদ লেগেই থাকে, আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই

15
যাদের বিপদ লেগেই থাকে, আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই
বিপদে ভেঙে পড়ার আগে ভাবুন যে, আপনি এমন এক সত্ত্বার ইবাদাত করেন যিনি ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে জ্বলন্ত আগুন থেকে, ইউনুস আলাইহিস সালামকে অন্ধকার গভীর সমুদ্রের বুকে মাছের পেট থেকে, আইয়্যুব আলাইহিস সালামকে দুরারোগ্য মারণব্যাধি থেকে, ইউসুফ আলাইহিস সালামকে গভীর কূপ থেকে, মুসা আলাইহিস সালামকে ফেরাউন বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করেছিলেন।
রিযিকের ভয় আপনাকে তাড়িয়ে বেড়ালে ভাবুন, আপনি সেই মহামহিমের ইবাদাত করেন যিনি বনী ঈসরাঈলদের জন্য ‘মান্না সালাওয়া’ নামে আসমানী খাবার পাঠাতেন। মারঈয়াম আলাইহাস সালামের জন্য তিনিই ফেরেশতা মারফত খাবার তার কক্ষে পৌঁছে দিতেন।
যদি অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েন, তাহলে স্মরণে নিমগ্ন হোন সেই রবের, যিনি জনমানবহীন উপত্যকায় অসহায় হাজরা আলাইহাস সালামের অনুনয় শুনে শিশু ইসমাঈলের পায়ের নিচ থেকে বের করে এনেছিলেন অবিরাম পানির ফুয়ারা। তিনিই নবি ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বুকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পুত্র ইউসুফ আলাইহিস সালামকে। মুসা আলাইহিস সালামকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তার জন্মদাত্রীর কোলে।
সন্তান হচ্ছেনা বলে বিষাদগ্রস্ত?
যাকারিয়া আলাইহিস সালামের কথা ভাবুন তো। জীবন-সায়াহ্নে বসেও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হোন নি তিনি, এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালাও তাকে নিরাশ করেন নি। তিনি কাউকেউ নিরাশ করেন না। একেবারে শেষ বয়সে বসে তিনি দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে সন্তান চাইলেন, এবং আল্লাহ তাকে সন্তান দিলেন।
‘কেউ কথা রাখেনা’ কে বললো? একজন ঠিক ঠিক কথা রাখেন। তার সাথেই কথা বলুন।
“একমাত্র কাফির ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না।” [সূরা ইউসুফ, ৮৭]
তিনি কাউকে নিরাশ করেন না। আল্লাহু-আকবার।

“যাদের বিপদ লেগেই থাকে, আপনাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই:

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘‘মুমিন নারী-পুরুষের নিজ জীবনে, তাদের সন্তানাদির জীবনে ও মাল-সম্পদে সর্বদা বিপদাপদ লেগেই থাকে। অতঃপর সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে এমন অবস্থায় যে, তার কোনো পাপই থাকে না।’’
তিরমিযি: ২৩২০; হাদিসটি সহিহ
“ব্যাপারটি বুঝতে কষ্ট হলে নিচের আয়াতটি পড়ুনঃ-
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,
‘‘তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ আপতিত হয়, তা তোমাদেরই কর্মের ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন (এসব বিপদের মাধ্যমে)।’’
[সূরা শুরা, আয়াত: ৩০]
আমরা কখনই এই দাবি করতে পারব না যে,আমরা আল্লাহর আনুগত্য সঠিকভাবে করতে পারছি এবং তাঁর নিষেধকৃত বিষয়াবলী থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকতে পারছি।
আমাদের প্রত্যেকের মাঝে ত্রুটি আছে,অসম্পূর্ণতা আছে। আমাদের উপর বিপদ এসে আমাদের অনেক গুনাহ ধুয়ে-মুছে সাফ করে দিয়ে যায়। সুতরাং আমরা যেন বিনয়ী হই, আল্লাহর সিদ্ধান্তগুলোকে সম্মান করি, তাঁর তাকদিরে সন্তুষ্ট থাকি।
একের পর এক বিপদের মাঝেও যেন আমরা সবর করে থাকতে পারি। বিনিময়ে আল্লাহ্ এত পুরস্কার দিবেন, যা তিনি ‘অগণিত’ শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন।
আল্লাহ্ বলেন,
‘‘নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদেরকে তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে অগণিতভাবে/হিসাব ছাড়া।’’
[সূরা যুমার, আয়াত: ১০]
“যে আল্লাহর নিকট কোন কিছুর কমতি নেই, যার ভাণ্ডারে শেষ বলে কিছু নেই, তিনি যখন ‘অগণিত’ শব্দটি বলেন, তখন সেটার পরিমাণ কত বেশি হতে পারে, তা ভেবে কূল-কিনারা করা যাবে না,
” আসুন আমরা সবর করি সর্বাবস্থায় বলি আলহামদুলিল্লাহ্, আল্লাহ আমাদের কবুল করুন আমিন!!

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here